পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে! হ্যাঁ ঠিক শুনেছে। এটা অনেকেই হয়তো জানেন না। স্তন ক্যান্সার (breast cancer) যে কেবলমাত্র মহিলাদের রোগ তা কিন্তু নয়। পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সারের মতো বিরল রোগ দেখা দিতে পারে। মহিলাদের থেকে পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা কম, তবে বিষয়টি নিয়ে ভাববার সময় এসেছে। সময় এসেছে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার।
প্রতি ২৮জন ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ১জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। কিন্তু পুরুষদের স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে খুব একটা আলোচনা করা হয় না। হ্যাঁ পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে এবং এটি কেবল মাত্র মহিলাদের রোগ নয়। সুপরিচিত অ্যামেরিকান গায়িকা বিয়ন্সের বাবা ম্যাথু নোলস স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্বে সমস্ত স্তন ক্যান্সার আক্রান্তদের ক্ষেত্রে পুরুষদের সংখ্যাটা মাত্র ১%। তবে মহিলাদের থেকে পুরুষদের মৃত্যুর হার ১৯% বেশি।
মহিলাদের থেকে পুরুষদের স্তনের আকার আলাদা। তবে পুরুষের যে ছোট্ট ব্রেস্ট টিস্যু থাকে তা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত পুরুষদের মৃত্যু হার বেশি তার জন্য মূলত দায়ী সচেতনার অভাব। অনেকেই বিষয়টি তেমন একটা গুরুত্ব দেন না। তাই যখন ধরা পড়ে তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।
গত কয়েক বছরে পুরুষদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। পুরুষদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার বিকাশের জন্য অনেক কারণ রয়েছে:
- বয়স- পুরুষদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বয়সের সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৬০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
- ইস্ট্রোজেনের প্রকাশ – যে পুরুষরা প্রোস্টেট ক্যান্সারের জন্য হরমোন থেরাপির ওষুধ গ্রহণ করছেন তাঁদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়। যা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- পারিবারিক ইতিহাস – যদি কারও পরিবারে আগে স্তন ক্যান্সার হয়ে থেকে থাকে তাদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
- শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি – শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়তে পারে বিভিন্ন কারণে যেমন লিভারের সমস্যা, কিছু জিনগত সমস্যা যেমন ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম, স্থূলতা ইত্যাদি।
পুরুষদের স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলি মহিলাদের মতো একইরকম।
প্রাথমিক পর্যায়ে, কোনও একটি স্তনের নীচে একটি ব্যথাহীন লাম্প বা পিণ্ড দেখা দিতে পারে। অন্যান্য সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে আলসার, স্তনবৃন্ত থেকে স্রাব বেড়োনো, স্তন ফেটে যাওয়া বা কুঁচকে যাওয়া, স্তনবৃন্ত বা স্তনের টিস্যুতে লালভাব বা জ্বালা।
পরবর্তী পর্যায়ে ধরা পড়লে, যে অতিরিক্ত উপসর্গগুলি দেখা যায় সেগুলি হল, বগলে লসিকা গ্রন্থিতে ব্যথা এবং হাড়ের তীব্র ব্যথা, যা থেকে বোঝা যায় ক্যান্সার পার্শ্ববর্তী টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়েছে।
যদিও মহিলাদের তুলনায় স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত পুরুষদের বাঁচার সম্ভাবনা অনেকটা কম, তবে উভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রেই পূর্বাভাস মোটামুটি সমান থাকে।
পুরুষদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সময় এসেছে পিঙ্ক-এর সঙ্গে ব্লু যোগ করার এবং মহিলা ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর।
আরও পড়ুন :-