কেমোথেরাপির সময় কোন পোশাক পরবেন? জেনে নিন

by Team Onco
206 views

ভাবছেন কেমোথেরাপির সেশনের সময় কোন ধরনের পোশাক পরবেন? কোন পোশাক আপনার  কেমোথেরাপির জন্য আরামদায়ক হবে? চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু টিপস, যা আপনাকে এই বিষয়ে সাহায্য করতে পারে।

কেমোথেরাপি সাধারণত কয়েক মাস ধরে চলে। আপনাকে ওষুধ কীভাবে দেওয়া হয় তার উপর নির্ভর করে (IV বা পোর্ট), আপনাকে আপনার পোশাকে কিছু পরিবর্তন আনতে হতে পারে। অতএব, আপনার কেমোথেরাপি সেশনের জন্য ব্যাগ গুছিয়ে নিন, সঙ্গে রাখুন আরামদায়ক পোশাক।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সময়ে জামা কাপড় কেনার সময় কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন:

জামা-কাপড়ের সাইজ়

কেমোথেরাপির সময় বেশিরভাগ লোকেরই ওজন কমে বা বেড়ে যায়। তাই খুব টাইট পোশাক কেনা থেকে বিরত থাকুন।

একটু ঢলঢলে জামাকাপড় বেছে নিন যাতে পোশাকটি খুব টাইট ফিটিংস না হয়। ঢলঢলে আরামদায়ক জামাকাপড় পরলে আপনারও বেশ ভালো লাগবে। কটন এবং রেয়নের মতো নরম কাপড়ের জামাকাপড় আপনাকে অনেকবেশি আরামদায়ক বোধ করতে সাহায্য করবে।

ট্রাউজার্স এবং প্যান্ট কেনার সময়ও এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন।

ওজন বাড়া-কমার ক্ষেত্রে এটি দারুণ উপকারী

গরম জামাকাপড়

হাসপাতালে আপনার ঠান্ডা লাগতে পারে এবং কেমোথেরাপি সেশন চলাকালীন ঠান্ডা বোধ হতে পারে।

কেবল মাত্র সোয়েটার জাতীয় কিছু পরলে আপনি আরাম বোধ করতে নাও পারেন। অস্বস্তি লাগতে পারে। তাই ভিতরে নরম জামা পরে তার উপর সোয়েটার বা অন্য কোনও গরম জামা পরুন।

খুব বেশি শীত শীত লাগলে সোয়েটারের নিচে নরম টি-শার্ট জাতীয় কিছু বেছে নিন।

মাথা, ঘাড় এবং হাতের তালু ঢেকে রাখতে মোজা, গ্লাভস, মাফলার এবং টুপি পরতে পারেন। গরম জামাকাপড় আপনার শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করবে।

গ্ল্যাভস পড়ুন

আপনি যদি এখনও ঠান্ডা অনুভব করেন তবে লেগ ওয়ার্মার বা পনচু ব্যবহার করে দেখুন যা আপনি নিয়মিত জামাকাপড়ের সাথেই পরতে পারবেন।

ক্যাথেটারের জন্য অ্যাক্সেস পয়েন্ট

IV লাইন এবং পোর্ট উভয়ই সাধারণত আপনার বুকের সাথে সংযুক্ত থাকে। এর মানে হল যে ঘাড় উঁচু করে কিছু পরা বা বুক ও বগলের চারপাশে লাগানো মোটেও সহজ নয়।

শরু গলার বদলে চওড়া গলা বা ইলাস্টিকযুক্ত টপ বেছে নিতে পারেন, তাতে জামা পরতে সুবিধে হবে। সবচেয়ে ভালো হল চওড়া ঘাড়ের কোনও টিশার্ট যা সহজেই পরে ফেলতে পারবেন।

মহিলারা এইসময় ব্রা পরা এড়িয়ে চলতে পারেন এবং পরিবর্তে ব্রাযুক্ত টপ বেছে নিতে পারেন, তাতে কেমোর সেশন চলাকালীন ব্রা-র বোতাম খোলা পরার ঝামেলা থাকবে না। 

সামনে বোতাম দেওয়া শার্টও এর জন্য খুব উপযোগী হতে পারে।

এই সময়ের জন্য সস্তা জামাকাপড় কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ প্রয়োজন অনুযায়ী জামায় ফুটো বা ছিঁড়ে ফেলতে হতে পারে।

আরামের জন্য শাল বা কম্বল

কেমোর সেশন চলাকালীন আপনার বুকের একটি অংশ উন্মুক্ত রাখতে হতে পারে। তাতে যদি আপনার অস্বস্তি বোধ হয় তবে কেমোথেরাপির সময় নিজেকে উষ্ণ এবং আরামদায়ক রাখতে শাল বা কম্বল চাপা নিতে পারেন।

সাহায্য ছাড়াই ড্রেসিং

আপনার যদি সদ্য কোনও অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে, বা কেমোথেরাপির কারণে ক্লান্তি বোধ হয়, তাহলে লক্ষ্য করবেন কিছু সময়ের জন্য হাত উঁচু করাও আপনার জন্য কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

সেক্ষেত্রে আপনার পিঠ বরাবর জিপ, বোতাম বা হুক দেওয়া জামাকাপড় পরা আপনার জন্য সহজ নাও হতে পারে। একইভাবে মাথা পার করে জামাকাপড় পরাও অস্বস্তিকর হতে পারে।

এই সময়ের জন্য জামাকাপড় কেনার সময়, এটি এমন কিছু কিনুন যা আপনি অন্য কারও সাহায্য ছাড়াই পরতে এবং খুলে ফেলতে পারবেন।

ক্যাপ এবং টুপি

ক্যাপ এবং টুপি আপনার উষ্ণতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। আপনি যদি চুল পড়তে শুরু করে এবং আপনার মাথা ঢেকে রাখতে চান, তাহলে বেছে নেওয়ার জন্য প্রচুর বিকল্প রয়েছে। 

হেড টাই, স্কার্ফ, ব্যান্ডানা, বেনি হ্যাট এবং একই রকম অনেক হেডওয়্যার আপনাকে এই সময়ে গ্ল্যামারাস দেখাতে সাহায্য় করতে পারে।

কোনও কিছু কেনার আগের আপনার মাথার নরম ত্বকের কথা মনে রাখবেন। সেইসঙ্গে এমন কিছু বাছাই করুন যা আপনি নিজে নিজেই খোলা-পরা করতে পারবেন।

এছাড়াও এখন বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন দামের উইগস রয়েছে। নানান ইকমার্স সাইটগুলোর দৌলতে আজকাল যা সহজেই পাওয়া যায়। সেগুলো মধ্যে থেকে আপনি আপনার পছন্দের জিনিস কিনে নিতে পারেন।

সূর্য থেকে সুরক্ষা

এই সময়ে আপনার ত্বক অনেক বেশি সংবেদনশীল হতে পারে। তাই চরম তাপমাত্রা এবং সরাসরি সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলুন।

একটি চওড়া টুপি, সানগ্লাস বা স্কার্ফ আপনাকে কঠোর সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করতে পারে। সেইসঙ্গে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না এবং একটি মৃদু ময়েশ্চারাইজার সঙ্গে রাখুন। এগুলো আপনি আপনার প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারেন।

ফেস মাস্ক

যে কোনও ভাইরাসের অপ্রয়োজনীয় এক্সপোজার এড়াতে এই সময়ে অবশ্যই মাস্ক পরুন। ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়ার কারণে, ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালীন সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।

হাসপাতালের মতো পাবলিক জায়গায় যাওয়ার সময় অবশ্যই সার্জিক্যাল N95 মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এগুলি যদি আপনার হাতের কাছে না থাকে, তাহলে নিজের সুরক্ষার জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসযোগ্য কাপড়ের দুই বা ততোধিক স্তর দিয়ে ডবল মাস্কিং বেছে নিন।

জামাকাপড় যত্ন

প্রতিবার ব্যবহারের পর সব কাপড় ধুয়ে ফেলতে হবে। কাপড় ধোয়ার সময় কঠোর রাসায়নিক বা তীব্র গন্ধযুক্ত ডিটারজেন্ট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

জামাকাপড় স্যানিটাইজ করতে একটি জীবাণুনাশক সাহায্য করতে পারে। কাপড় ধোয়ার পর অবশ্যই তা রোদে শুকানো প্রয়োজন।

আরও পড়ুন : কেমোথেরাপি সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জেনে নিন

Related Posts

Leave a Comment